আলুর দাম কিছুটা নাগালে এলেও গত বছরের চেয়ে তা এখনও বেশি। গতকাল রোববার ঢাকার খুচরা বাজারে আলুর কেজি ২৬ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। সপ্তাহ দুয়েক আগে এ আলু ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। সেই হিসাবে দর কমেছে ৪ থেকে ৫ টাকা। গত বছরের এ সময় আলুর কেজি ছিল ১৮ থেকে ২২ টাকা। সে হিসাবে গত বছরের তুলনায় এখনও আলুর দর কেজিতে ৮ টাকা বেশি।
সরকারি সংস্থা টিসিবির তথ্য বলছে, এক মাসের ব্যবধানে আলুর দর কেজিতে ৩৩ দশমিক ৭৭ শতাংশ কমেছে। তবে এক বছরের তুলনায় দর এখনও ৩৪ শতাংশ বেশি। এদিকে কারওয়ান বাজার ও তেজগাঁওয়ের কলোনি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, দাম কমার তালিকায় আছে কাঁচামরিচসহ কয়েকটি সবজি।
গত বছরের এপ্রিলের পর থেকে বাড়তে থাকে আলুর দর। এক পর্যায়ে রেকর্ড দরে উঠে হয়েছিল ৭০ থেকে ৮০ টাকা। বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার গত সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে প্রতি কেজি আলুর খুচরা দর ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা নির্ধারণ করে দেয়।
তবু নিয়ন্ত্রণে না আসায় ভারত থেকে আমদানি করা হয়। পাশাপাশি বাজারে নতুন আলু আসতে শুরু করে। তাতেও খুব বেশি সুফল পাননি ভোক্তারা। আলুর মৌসুম এখন প্রায় শেষ দিকে। সরবরাহে কোনো টান দেখা যায়নি। ফলে কিছুটা কমে আসছে দর।
গত বছর ভোক্তার চোখে জল এনেছিল কাঁচামরিচ। ৯০০ টাকা পর্যন্ত কেজি বিক্রি হতে দেখা গেছে ঢাকায়। পরে অবশ্য আমদানি শুরু হলে দাম কমতে থাকে। দামের চূড়ায় ওঠা সেই কাঁচামরিচের দরও এখন নেমেছে ৬০ থেকে ৭০ টাকার ঘরে।
তবে শীতের কোনো সবজির দর কমেনি। ফলে বেশি দামেই ভোক্তাকে শীতকালীন সবজি কিনতে হয়েছে। এখন গরম চলে আসায় শীতের সবজির স্বাদও কমে আসছে। তাতে চাহিদাও আগের চেয়ে কম। ফলে কয়েকটি সবজির দাম কমেছে। শিমের কেজি ৩০ থেকে ৩৫, ফুল ও বাঁধাকপির পিস ২০ থেকে ২৫ টাকার মধ্যে নেমে এসেছে। গত দুই সপ্তাহে ডিমের দরও ডজনে ১০ টাকা কমে ১৩০ টাকায় এসেছে। এক-দেড় মাস আগে গাজরের কেজি ছিল ১০০ থেকে ১২০ টাকা, যা এখন কেনা যাচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়।
এদিকে সরকার শুল্ক কমানোর কারণে গত শুক্রবার থেকে নতুন কম দরে সয়াবিন তেল বিক্রি হওয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত নতুন দরের তেল দেখা যায়নি বাজারে। তবে আগের বাড়তি দরের তেলে কিছুটা ছাড় দিয়ে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।
দর দ্রুত বাস্তবায়নে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর থেকে তেল পরিশোধনকারী কারখানায় পর্যবেক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এরই অংশ হিসেবে এস আলম গ্রুপ গতকাল এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ভোক্তা অধিকার তাদের মিলে পরিদর্শন ও অভিযান পরিচালনা করেছে। বিজ্ঞপ্তিতে প্রতিষ্ঠানটি দাবি করেছে, সরকার নির্ধারিত দরের চেয়ে এক টাকা কমে তারা সয়াবিন তেল বিক্রি করছে।
চিনির ক্ষেত্রে কিছুটা উল্টোভাব দেখা গেছে। শুল্ক কমালেও চিনির দর ঊর্ধ্বমুখী। প্রতি কেজি প্যাকেট ও খোলা চিনি ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
তবে আগে থেকেই বেড়ে যাওয়া দরেই বিক্রি হচ্ছে চাল, ডাল, ছোলা, পেঁয়াজ, গরুর মাংস, ব্রয়লার মুরগি, খেজুরসহ সব ধরনের ফল।